টিস্কোয়াফ ফ্রেমওয়ার্কের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী – উদ্ভাবনীমূলক চিন্তাভাবনা সংযুক্তিকরণের মধ্য দিয়ে শিক্ষাকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে মনোগ্রাহী করে তুলতে হবে

0 minutes, 3 seconds Read

কাকেই – প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা যাতে আনন্দময়, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ পায় সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি রাজ্যের ভবিষ্যতে প্রজন্মের স্বার্থে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও রাজ্যে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ৪ জুলাই রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যব্যাপী ‘টিস্কোয়াফ’ (টি.এস.কিউ.এ.এ.এফ) অর্থাৎ ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট অ্যাড অ্যাক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্কের সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে এবং সমগ্র শিক্ষা অভিযান ও এস.সি.ই.আর.টি.-এর সহায়তায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং ধলাই জেলায় পরিচালিত ‘স্কুল কমপ্লেক্স’ কর্মসূচিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন স্তরের ৫১ জন শিক্ষাকর্মীকে মুখ্যমন্ত্রী সংবর্ধিত করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্র ‘টিস্কোয়াফ’-এর একটি বইয়ের মলাট উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিস্কোয়াফ’ রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রের ব্যাপক পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি বিদ্যালয় যেন নিজের বর্তমান অবস্থানকে নির্ণয় করে উন্নয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। এই ফ্রেমওয়ার্কে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ এর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে বলেন, পড়াশুনা শিখানোর গতানুগতিকে চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। উদ্ভাবনীমূলক চিন্তাভাবনা সংযুক্তিকরণের মধ্য দিয়ে শিক্ষাকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে মনোগ্রাহী করে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়শই বলেন, শিক্ষা কেবলমাত্র পাঠ্যবই ভিত্তিক না হয়ে বরং মূল্যবোধ, বিকাশ ও জাতি গঠনের মাধ্যম হওয়া উচিত। যাতে আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামীদিনে দেশ ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে। ছাত্রাবস্থা থেকেই তাদের সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী সকলে প্রতি আহŸান জানান।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য বাজেটের সর্বাধিক অর্থ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয়িত হয়। রাজ্যের শিক্ষা প্রধান পরিকাঠামো উন্নয়নে সহর্ষ নিপুণ, বিদ্যাসেতু-এর মত কর্মসূচি চালু রয়েছে। সুতরাং শিক্ষাক্ষেত্রের যেকোনও বিভাগে যাতে রাজ্যের নাম দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির নামে সাথে অন্তর্ভুক্ত হয়, সেদিকে নজর রেখেই সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা মানুষের জানা এবং অজানার মধ্যে সেতুবন্ধন করে। শিক্ষার মধ্য দিয়ে নৈতিকভাবে শক্তিশালী মানব চরিত্র গঠন সম্ভব।
শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাকে আরও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সি.এম.সাথ প্রকল্পে ২০০ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে ৬০ হাজার টাকা করে বৃত্তি, মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনায় ১৪০ জন ছাত্রীকে স্কুটি, ১,২২,৫০৯ জন নবম শ্রেণির ছাত্রীকে বাইসাইকেল প্রদান করা হয়েছে। মহাবিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীদের ফি মকুব করা হয়েছে। ফলে মহাবিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০২০ ইতিমধ্যে চালু করা হয়েছে। এরফলে আগামীদিনে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা দেশের অন্যান্য প্রান্তের ছাত্রছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে সম সুযোগ পাবে। স্বচ্ছ নিয়োগনীতিতে কিছুদিন পূর্বেও ২০০ জনের অধিক -শিক্ষিকা, ১০৭ জন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয়েছে। এবছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়গুলিতে পাশের হার অনেকটাই বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, ড্রপ আউটের হারের নিরিখে জাতীয় গড়ের চাইতে রাজ্যের হার অনেকটাই কম। আগামীদিনে রাজ্যে পাঠ্যসূচি পরিবর্তিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বুনিয়াদী শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন. সি. শর্মা। অনুষ্ঠানে ‘টিস্কোয়াফ’-এর উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এস.বি.আই. ফাউন্ডেশনের এম.ডি. তথা সি.ই.ও সঞ্জয় প্রকাশ। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বিভিন্নস্তরের শিক্ষাকর্মীগণ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *